Thursday, February 22, 2018

ইন্টারনেট সম্পর্কে যে বিষয় গুলো শুনলে আপনি অবশ্যই অবাক হবেন!!

আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ইন্টারনেট জগত সম্পর্কে ১০ টি আশ্চর্য সত্য যা শুনলে হয়তো আপনি থমকে যাবেন। আমি নিজেও অবাক হয়ে গিয়েছিলাম কথা গুলো শুনে। জটিল কিছু সত্য নিয়ে আজ আমি আপনাদের কাছে হাজির হয়েছি। আশাকরি ভাল লাগবে। আমার তো খুব ভালো লেগছে। এবার আপনাদের পালা পরে উপলব্ধি করা শুরু করুন।:P

১) ইন্টারনেট ব্যাবহারকারির সংখ্যাঃ
আমরা অনেকেই ইন্টারনেট ব্যাবহার করি এবং জানি যে এটার গুরুত্ব অনেক। কিন্তু কেউ কি জানেন ইন্টারনেট ব্যাবহারকারির সংখ্যা কি হারে বাড়ছে?


২০০২ সালে ইন্টারনেট ব্যাবহারকারির সংখ্যা ছিল মাত্র ৬০০ মিলিয়ন আর এখন সেটা এসে দাঁড়িয়েছে ২.২ বিলিয়নে। এক দশকে প্রায় ৩৬৭% বেড়েছে।

ভবিষ্যতে কত হবে সেটা ভাবতে পারছেন? এমন একদিন হয়তো আসবে যখন ইন্টারনেট যে ব্যাবহার না করবে তাকে পাগল বলবে মানুষ।

২) ফেসবুক সম্পর্কে একটি আশ্চর্য সত্যঃ
আমরা সবাই ফেসবুকে ছবিতে, স্ট্যাটাসে লাইক দেই কিন্তু আমরা কি জানি প্রতিদিন কতটা লাইক হচ্ছে? বর্তমানে ফেসবুকের অ্যাক্টিভ ব্যাবহারকারির সংখ্যা হচ্ছে ১.২১ বিলিয়ন। সবাই প্রতিনিয়ত ছবি ভিডিও আপলোড করছে। এখন চলুন সেই আশ্চর্য সত্যটা জানি,

ফেসবুকে প্রতিদিন ৫০০ টেরাবাইট ডাটা আদান প্রদান হয়, প্রতিদিন প্রায় ২.৭ বিলিয়ন লাইক হয় এবং ৩০০ মিলিয়ন ছবি আপলোড হয়।

১০২৪ গিগাবাইটে হয় ১ টেরাবাইট, প্রতিদিন ৫০০ টেরাবাইট ডাটা আদান প্রদান কি বাড়ির কাছে? আমি নিজেই প্রতিদিন অন্তত ১ এমবি আপলোড করি (Proud)

৩) স্প্যামিং সম্পর্কে একটি তথ্যঃ
স্প্যামাররা অনেক সচেতন!! সোশাল মিডিয়াতে আমরা যেসব লিঙ্ক দেখি তার অনেক গুলোই স্প্যাম যেখানে ক্লিক করলে আপনার অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।

আমরা ফেসবুক টুইটার সহ অন্যান্য সোশাল মিডিয়াতে যেসব অ্যাকাউন্ট দেখি তার শতকরা ৪০ ভাগ অ্যাকাউন্ট স্প্যামারদের খোলা। সকল মেসেজের মধ্যে শতকরা ৮ ভাগ মেসেজ পাঠানো হয় স্প্যামারদের দ্বারা।

আমি কয়েকদিন পর পর মেসেজ পাই, আফ্রিকান কোন মেয়ের ছবি দেওয়া প্রোফাইল থেকে পাঠায়, এমন সুন্দর করে কথা বলে যেন আমি তার হাজার বছরের পরিচিত। এদের একটা লক্ষন হল আপনার সাথে ফেসবুকে কথা বলবে না বরং মেইল চাইবে। এরকম দেখলেই সাবধান হয়ে যাবেন, অনেকেই আছেন এমনকি একসময় আমি নিজেও এমনটা করতাম, যেকোনো মেয়ে দেখলেই চ্যাট করতে ইচ্ছা করতো তবে এখন থেকে সতর্ক থাকবেন, বাংলাদেশি মেয়েদের (হয়তো আপনার ভাই-ব্রাদার :D) সাথে চ্যাট করেন কিন্তু আফ্রিকান মেয়েদের সাথে কইরেন না।

৪) গুগল সার্চ সম্পর্কে একটি সত্যঃ
হেহেহেহে!! মামার কথা আর কি বলবো, কদিন পর পর শুনি এই কম্পানিকে গুগল কিনে নিয়েছে ঐ কম্পানিকে গুগল কিনে নিয়েছে। সে শুধু বড় হচ্ছেই, এখন পর্যন্ত প্রায় ১৪৫ টার মতো কম্পানি গুগল কিনেছে/মার্জ করেছে। এই গুগল যে একদিন কত বড় হবে তা ভাবলেই আমার মাথা ঘুরে।

প্রতি মাসে গুগল ১০০ বিলিয়ন সার্চ করে তার মানে হল প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৪০,০০০ সার্চ রেসাল্ট আমাদেরকে দেয়।

যেদিন শুনেছিলাম যে পৃথিবীর প্রথম মোবাইল ফোন তৈরিকারী কম্পানি মটোরোলাকে কিনে নিয়েছে গুগল সেদিন আসলেই অবাক হয়েছিলাম। এত বড় একটা কম্পানি যেটা কিনতে গুগলকে গুনতে হয়েছে ১২.৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার। তাছাড়া ব্লগার, অ্যান্ড্রয়েড, ইউটিউব, প্লিঙ্ক, ওয়েয, পিকাসা এসব তো আছেই।

৫) ওয়েবকেম সম্পর্কে একটি মজার তথ্যঃ
প্রযুক্তির যত সব নতুন নতুন আবিষ্কার দেখি তার সবগুলোই কোন না কোন প্রয়োজনবোধ থেকে এসেছে। ওয়েবকেম নিঃসন্দেহে একটি আশ্চর্য আবিষ্কার যদিও এখন আমাদের কাছে তেমন আশ্চর্য মনে হয় না।

কেমব্রীজ ইউনিভার্সিটির কয়েকজন অলস ছাত্ররা ওয়েবকেম আবিষ্কার করেছে, তাদের উদ্দেশ্য ছিল নিজের রোমে বসে কফি রোমের খবর রাখা।

Trojan Room coffee pot একটি কফি রাখার পাত্র ছিল কেমব্রীজ ইউনিভার্সিটিতে। ওয়েবকেমটা বানানো হয়েছিল যেন সেই পাত্রের কফি শেষ হয়ে যাচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য যেন বার বার ঐ রোমে না যেতে হয়। ওদের মতো অলস হতে পারলেও ভালো অলসতার বহিঃপ্রকাশ হল আজকের নিরাপত্তা ব্যাবস্থায় ব্যাবহৃত শক্তিশালী ক্যামেরা।

Dr. Quentin Stafford-Fraser এবং Paul Jardetzky এই দুজন হলেন প্রথম ওয়েবকেমের নির্মাতা।

৬) প্রথম ওয়েবসাইটঃ
স্যার টিম বার্নাস লী লন্ডনে জন্ম নেওয়া একজন পদার্থবিধ। তিনি চিন্তা করেছিলেন এমন একটি হাইপারলিঙ্কের কথা যার দ্বারা পৃথিবীর সবাই যুক্ত থাকবে। সেই মহৎ ব্যাক্তির অসাধারন আবিষ্কারকে মানুষ উন্নতির চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে।

info.cern.ch হল বিশ্বের প্রথম ডোমেইন/ওয়েব সার্ভার। ১৯৯১ সালের আগস্ট মাসের ৬ তারিখে এটি পাবলিশ করা হয়।

আপনারা ইচ্ছা করলে এখনি সেই ওয়েবসাইট থেকে ঘুরে আসতে পারেন (নাহ এখন না, পোস্টটা শেষ করে নিন ) সাইটটা এখনো আগের মতোই আছে, সাদামাটা করে রেখে দেওয়া হয়েছে যেন ইতিহাসটা অক্ষুন্ন থাকে।

৭) সবচেয়ে দামি ডোমেইনঃ
সহজ এবং সুন্দর নামের ডোমেইন সবার কাছেই পরিচিত। আমি নিজে Yahoo তেমন ব্যাবহার না করলেও Yahoo নামের ডোমেইনটা আমার প্রিয়। এই সুন্দর এবং সহজে মনে রাখার মতো ডোমেইন গুলো বিক্রি হয় অনেক দামে। আসুন দেখি এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে দামি ডোমেইনের নাম গুলো।

সবচেয়ে দামি ডোমেইনের নাম হল insure.com দাম, ১৬ মিলিয়ন ডলার। দ্বিতীয় দামি ডোমেইনের নাম হল sex.com যার দাম ১৪ মিলিয়ন ডলার।

অনেকেই ভাবছেন তাহলে গুগল বা ফেসবুকের ডোমেইনের দাম কত? এখানে যে নাম দুইটা দিলাম সেগুল কোন কম্পানি না, শুধু একটা ওয়েবসাইট অ্যাড্রেস। দ্বিতীয় ডোমেইনটার দাম কেন যে এত বেশি হল সেটা হয়তো সবাই বুঝতে পেরেছেন। প্রথমটার কারন আমি নিজেও বুঝি নাই (insurance একটি ভালো বিজনেস এটা বুঝি )

৮) দেশভিত্তিক ইন্টারনেট ব্যাবহারকারির সংখ্যাঃ
অন্যান্য দেশের কথা জানার আগে আসুন দেখে নেই আমাদের দেশে ইন্টারনেট ব্যাবহারকারির সংখ্যা কত।

২০০৫ সালে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যাবহারকারির হার ছিল ০.২%
২০০৬ সালে ১%
২০০৭ সালে ১.৮%
২০০৮ সালে ২.৫%
২০০৯ সালে ৩.১%
২০১০ সালে ৩.৭%
২০১১ সালে ৫%
২০১২ সালে ৬.৩%
ভারতে ২০১২ সালে ইন্টারনেট ব্যাবহারকারির হার ছিল ১২.৬% এবং একই সালে পাকিস্তানে ছিল ১০%।

এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ইন্টারনেট ব্যাবহারকারির সংখ্যা রয়েছে Iceland-এ ৯৭.৮% ইউএসএ তে ৭৮.৩% চিনে ৩৮.৪% এবং সবচেয়ে কম ইন্টারনেট ব্যাবহারকারী দেশ হল উত্তর কোরিয়া যেখানে ০% মানুষ ইন্টারনেট ব্যাবহার করে।

আমি সবচেয়ে বেশি আশ্চর্য হয়েছিলাম এই তথ্যটা জেনে, Iceland ছোট একটা দেশ অনেকে হয়তো এই দেশের নাম শুনেননি অথচ তারাই ইন্টারনেট ব্যাবহারে এগিয়ে আছে। সমস্যা নেই আমারাও এগিয়ে জাচ্ছি, আমি তো ফেসবুকের নাম শুনেছিলাম কলেজে এসে কিন্তু এখন ক্লাস সিক্সের পলাপাইনও জানে এবং ফেসবুক ব্যাবহার করে।

৯) সবচেয়ে বেশি বই লেখকঃ
Philip M. Parker হলেন INSEAD নামের একটি বিজনেস স্কুলের একজন প্রফেসর। আমরা জানি বই লিখতে একটি টাইটেল লাগে, কি কি টপিক থাকবে তা লাগে, একটা একক ISBN (International Standard Book Number) লাগে, কভার পেজ লাগে, বেক কভার লাগে আর কি! সবচেয়ে বড় কথা হল বই লিখতে জ্ঞান লাগে।

Philip M. Parker এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০০০০ টি বই লিখেছেন। তিনি হলেন পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বইয়ের লেখক।

এই বেক্তির এত কঠিন কাজকে সহজ করেছে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট। ভদ্রলোক গণিত, জীববিজ্ঞান এবং অর্থনীতিতে অনার্স করেছেন (আমারতো একটা নিয়েই টানাটানি :P) বই লিখা সহজ কোন কাজ না, বই হল মানুষের দিক নির্দেশনা আর সেটা যদি ভুল দিকে যায় তাহলে সব শেষ!!

১০) ইন্টারনেটের ওজনঃ
ইন্টারনেটেরও আবার ওজন আছে??? শুনলে মাথা ঘুরবে না তো কি করবে? তবে কথাটা সত্যি, এই ইন্টারনেট জগতের একটা সত্যিকারের ওজন আছে। আর সেই ইন্টারনেটের ওজনের পরিমাণ শুনলে তো আপনার মাথা আরো ঘুরবে

ইন্টারনেটে যেসব তথ্য আছে তার ওজন 2.0 × 10-7 ounces

গনিতবিদ কোন ভাই থাকলে একটু সাড়া দেন, আমার মাথা লাঠিমের মতো ঘুরতাসে যাই হোক এই ওজনটা সম্পর্কে একটু ধারনা আমি দিয়ে দেই ১ আউন্স=২৮.৩৪৯৫ গ্রাম। আমার মতো এবারো অনেকেই ওজনের পরিমাণটা বুঝবেন না আমার মতো অংকে কাচা ব্যাক্তিবর্গের জন্য বাংলা হিসাব দিলাম

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: